মোঃ জসিম উদ্দিন; খানসামা দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগ নির্ণয়ে এক্সরে মেশিন সচল থাকলেও স্বল্পখরচে হাড়ভাঙাসহ নানা শারিরীক পরীক্ষার জরুরি এই যন্ত্রটিই দীর্ঘ ৫ বছর ধরে অন্ধকার ঘরে তালাবদ্ধ হয়ে আছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির এক্সরে মেশিন এভাবে বছরের পর বছর অচল পড়ে থাকায় এ উপজেলায় প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত। ফলে উপজেলাবাসীকে সরকারি চিকিৎসার প্রধান ঠিকানা এই ৫০ শয্যার হাসপাতালটি ফেলে পাশের বিভিন্ন বেসরকারি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে।

সেখানে বাড়তি খরচে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে, এদের অনেকেই দরিদ্র রোগী। নীতিমালা বহির্ভূতভাবে চলা এ সকল নামসর্বস্থ ক্লিনিকে গলা কাঁটা ফিতে সর্বশান্ত হচ্ছেন অনেক রোগী এবং তাদের পরিবার। এ নিয়ে যেন দেখার কেউই নেই। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, এক্সরে যন্ত্র রাখা কক্ষটি বন্ধ।

দীর্ঘদিন ধরে না খোলায় জং ধরে গেছে দরজার তালায়। জানা যায়, গত বছরে উপজেলা পরিচালনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে আধুনিক এক্স-রে মেশিন ক্রয়ের ব্যবস্থা করা হলেও সঠিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করায় ক্রয়কৃত এক্স-রে মেশিনটি প্যাকেটবন্দি হয়ে হাসপাতালের এক্স-রে রুমে পড়ে আছে।

এ ছাড়া আরও জানা গেছে, রোগীদের এই ভোগান্তি দূর করতে গত বছরে উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প (ইউজিডিপি) এর আওতায় বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ লাখ টাকায় ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ই-টেন্ডার হয়। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাফাত এন্টারপ্রাইজ প্রাঃ লিমিটেড যন্ত্রপাতি সরবরাহের কাজটি পায়।

পরে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সেসব মালামাল হাসপাতালে সরবরাহ করলে এক্সরে মেশিনটি বারকোডবিহীন পুরনো এবং যন্ত্রটির অনেক জায়গায় মরিচা ও দাগ উত্তোলনের অভিযোগ উঠে।কিন্তু এই অভিযোগ উঠার দুই মাসেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা এলজিইডি বিভাগের মধ্যে বিষয়টি সুরাহা হয়নি। যার ফলে প্যাকেটবন্দি হয়ে আছে মেশিনটি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, রোগীদের ভোগান্তি লাঘবে এক্সরে মেশিন প্রদান ও চালু করতে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসানুর রহমান চৌধুরী বলেন, উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পুরোনো যন্ত্রপাতি পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে।

অন্যথায় বিল প্রদান নয়। তিনি আরো বলেন, এই সমস্যা সমাধানের সাথে নতুন এক্স-রে মেশিনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি প্রদান অব্যাহত আছে।